২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের রাজধানী হবে ঢাকা

মুক্তবার্তা ডেস্ক: আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে ঢাকাকে উন্নত দেশের রাজধানী হিসেবে ধারাবাহিকভাবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ঢাকাকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশের রাজধানী এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের রাজধানী হিসেবে ধারাবাহিকভাবে গড়ে তোলা হবে।

মন্ত্রী গতকাল বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক মিটিং অন টোয়ার্ডস্ গ্রেট ঢাকা’ শীর্ষক সভার উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘কমিটমেন্ট টু ট্রান্সফরমিং ঢাকা’ শীর্ষক বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সভায় বিশ্বব্যাংকের ঢাকাস্থ কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিও ফ্যান, সংস্থাটির দক্ষিণ এশীয় প্রধান অর্থনীতিবিদ মারটিন রামাসহ সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ঢাকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ঢাকার আয়তন বাংলাদেশের আয়তনের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এ নগর দেশের মোট জিডিপির ৩৬ শতাংশ যোগান দিচ্ছে এবং ৪৪ শতাংশ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। এ পরিসংখ্যান ঢাকার অর্থনৈতিক তাৎপর্যকে তুলে ধরে।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব ছাড়াও ঢাকার অন্যতম প্রধান ভূমিকা রয়েছে। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক বিনিয়োগ, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অনেক বিষয়ে ঢাকার কর্মকাণ্ড সারাদেশে প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেন, ঢাকায় জনসংখ্য খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার জনসংখ্যা ৩ কোটি অতিক্রম করবে। সামনে এ মহানগরীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ভবিষ্যৎ প্রয়োজন মেটাতে সরকার সব সেবা সংস্থাগুলোকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়তন ২৭০ বর্গ কিমি হয়েছে, যা আগের ১২৭ বর্গ কিলোমিটারের তুলনায় প্রায় ১১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বর্ধিষ্ণু আয়তন অনুসারে সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহেরও সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। দুটি সিটি করপোরেশন এবং অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি ঢাকাকে মানসম্মত পরিবেশ ও বসবাস উপযোগী রাখার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। যার মধ্যে যানবাহন ব্যবস্থায় মাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, ঢাকা সার্কুলার রুট (পার্ট-২) এবং ফকিরাপুর-ঝিলমিল ফ্লাইওভার প্রকল্পের বাস্তবায়নের কথা বলেন।

এছাড়া মন্ত্রী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক ও সহজ করতে ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের মাধ্যমে একটি সার্কুলার নৌপথের কথাও বলেন। মন্ত্রী ঢাকার চারপাশের নদীসমূহকে দূষণমুক্ত ও দখলমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে তার সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কাজ করছে বলে জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ঢাকা শহর মাত্র ২০ শতাংশ পয়ঃনিষ্কাশনের আওতায় এসেছে। ভবিষ্যতে শতভাগ পয়ঃনিষ্কাশনের আওতায় আনতে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

Related posts

Leave a Comment