স্বেচ্ছাসেবকলীগে নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন যারা

মুক্তবার্তা ডেস্ক:  দীর্ঘ সাত বছর পর নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ নভেম্বর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। একে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এবার কাউন্সিলে ত্যাগী, মেধাবী, স্বচ্ছ ইমেজধারী এবং ওয়ান ইলেভেনের পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়নের চিন্তা আছে আওয়ামী লীগের। দলের প্রধান শেখ হাসিনার মনোভাবও তাই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদেরও দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১১ জুলাই থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওছার ও পঙ্কজ দেবনাথ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর থেকেই তৃণমূলের জেলা, উপজেলা, মহানগরের প্রায় প্রতিটি ইউনিটের কমিটি সক্রিয় রয়েছে। তবে দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় সম্মেলন না হওয়ায় ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা মূল্যায়ন পাচ্ছেন না। অনেকেই দীর্ঘ দিন একই পদে থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছেন। এ জন্য সব সহযোগী সংগঠনের নেতা নির্বাচনে তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়োজনে ভোটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনের পক্ষেও মত দিয়েছেন তিনি। এরপর সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচনের দাবি উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্র ও তৃণমৃলে।

নেতৃত্বের দৌড়ে সবার থেকে এগিয়ে আছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। ইতোমধ্যে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করা সাচ্চু তৃণমূলেও তুমুল জনপ্রিয়। ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ (উত্তর) এর প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ(শামীম-পান্না/ বাহাদুর- অজয়) এর সাবেক সহ- সভাপতি, ৯০ এর স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে মুজিব আদর্শের সাহসী সৈনিক, ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে আহত মৃত্যুন্জয়ী রাজপথের নিবেদিত প্রাণ দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ শাকিব বাদশা, আব্দুল আলীম বেপারী ও খায়রুল হাসান জুয়েল রয়েছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদের লড়াইয়ে।

শেখ সোহেল রানা টিপু বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগে নেতৃত্ব পাওয়ার প্রধান মানদণ্ড হোক ক্লিন ইমেজ, ত্যাগী মনোভাব, সাংগঠনিক দক্ষতা। জাতির পিতার আদর্শে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মানুষের জন্য রাজনীতি করি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও মইনুদ্দিন মহিন, সহ-সভাপতি, সালে মোহাম্মদ টুটুল,দপ্তর সম্পাদক, মজিবুর রহমান সপন সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আলোচনায় রয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্যতম প্রভাবশালী সহসভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কারা নেতৃত্বে আসবে এবং কিভাবে আসবে। ভোটেও হতে পারে। তবে ভোট সব সময়ই ভালো হবে এমনটা নয়। তিনি বলেন, আমরা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাহাউদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে কাজ করে আসছি। নেত্রী যা সিদ্ধান্ত নেবেন, হাসি মুখে মেনে নেব। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো: আবু কাউছার কাউন্সিল প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, সম্মেলনকে সফল করার জন্য ইতোমধ্যে ১২ উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি বর্ণাঢ্য সম্মেলন উপহার দেয়ার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন সে সিদ্ধান্ত স্বাগত জানাই। তিনি যে জায়গাতে আমাকে রাখবেন সেখানেই একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাবো।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ একটি সুসংগঠিত দল। ত্যাগী, মেধাবী ও পরীক্ষিতরাই নেতৃত্বে আসবে। কাউন্সিলরদের মতামত প্রাধান্য পাবে। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব আনা হতে পারে। সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। তবে সব কিছু হবে নেত্রীর পরামর্শে। উনি যেভাবে পরামর্শ দেবেন, সে অনুসারেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হবে।

Related posts

Leave a Comment