মুক্তবার্তা ডেস্ক:কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে অসুস্থ ছেলের মৃত্যু হয়। পরে কফিন বন্দি ছেলেন দেহ নিয়ে ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে বাবারও মৃত্যু হল। হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের প্রান্তিক এলাকা বনগাঁয়। মৃত বাবার নাম রফিক মণ্ডল এবং পুত্রের নাম আসাদ মণ্ডল। তারা গাজীপুরের বাসিন্দা।
পুত্র এবং স্বামী হারিয়ে শোকে মুহ্যমান আসমা বিবি ভারত-বাংলাদেশের জিরো পয়েন্টে দেশে ফেরার প্রহর গুনছেন এখন।
রোববার কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাত্র ১৫ বছরের কিশোর আসাদ মণ্ডলের। দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলে আসাদ। প্রায় পনের দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর মারা যায় সে।
ছেলের অকাল মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি মধ্যবয়স্ক বাবা রফিক মণ্ডল এবং মা আসমা বিবি। শোক সামলে তবুও ছেলের দেহ দেশে ফেরার সরকারি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন সোমবার। কলকাতার উপদূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর মাইক্রোবাসে কফিন বন্দি দেহ নিয়ে রওনা করেন উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তের দিকে।
কিন্তু যশোর রোড ধরে হাবড়া এলাকায় পৌঁছনোর পর থেকে শোক সামাল দিতে পারছিলেন না বাবা রফিক। বার বার কেঁদে উঠছিলেন, আর বুকে হাত দিয়ে জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে গাড়ি পৌঁছে যায় দুই দেশের সীমান্তের শহর বনগাঁ। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই পিতা। নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেই কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন- এই ভাবেই ঘটনার বর্ণনা করছিলেন স্বামী-সন্তান হারানো আসমা বিবি।
বনগাঁ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ মুখার্জি জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। তবে ময়না তদন্ত ছাড়া সঠিক কারণ জানা সম্ভব নয়।
কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কনসুলার বি.এম জামাল হোসেন বলেন, এখনও আমাদের কাছে রফিকের মৃত্যুর বিষয়ে কোনও কাগজপত্রের আবেদন জমা পড়েনি। কিন্তু তারা আবেদন জানালে দ্রুততার সঙ্গে কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হবে।