সরকার বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করছে : গয়েশ্বর

মুক্তবার্তা ডেস্ক: বিচার বিভাগের ওপর সরকার নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে তার মাধ্যমে সরকার গোটা বিচার ব্যবস্থার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে।’

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর এসব কথা বলেন। ‘সুশাসন ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামে বিএনপিপন্থী একটি সংগঠন।

গয়েশ্বর বলেন, ‘গত ২ তারিখে প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলেন। এর আগেও তিনি এক মাসের ছুটিতে গিয়েছিলেন। তখন তার ছুটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কোনো ধরনের কথা ওঠেনি। কারণ সেই ছুটি ছিলো যথারীতি এবং তার নিজের ইচ্ছায়। সেই ছুটির দরখাস্ত রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন কি করেননি সেটা কিন্তু পত্রপত্রিকায় আসেনি। কারণ এটা একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নিজের ছুটি তিনি নিজেই নেন এবং বঙ্গভবনের রেজিস্ট্রার কর্তৃক অনুমোদিত হয়।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ছুটিকালীন সময়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের নিয়মানুযায়ী প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি নিয়োগ দেন এবং অনুমোদন করেন। কিন্তু এবার যখন তিনি ছুটি নিলেন তখন তার ছুটির বিষয়টি আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল জানালেন। এটাতো তাদের কাজ নয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হলে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রয়োজন। সংবিধানকে যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা যায় তাহলে সেখানে সুশাসন থাকে।’

তিনি বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত করে স্বাধীন বিচার বিভাগ। স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং প্রশাসন একে অপরের পরিপূরক হিসেবে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যেখানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না, সেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও আইনের শাসনের তোয়াক্কা করে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ উপাধি নিয়ে কথা বলেন গয়েশ্বর। তিনি বলেছেন, ‘যে দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, সর্বত্র গুম খুন চলতেই থাকে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করে যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের প্রধানকে ‘মাদার অব হিউমিনিটি উপাধি’ দেওয়া ঠাট্টা মশকরা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

শেখ হাসিনার সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘নোবেল তো শেখ হাসিনার কপালে জুটলো না। তবে একটা নোবেল তার পাওয়া উচিত ছিলো। অর্থনীতিতে না হোক, বিজ্ঞানে না হোক, শান্তিতে না হোক গুমের জন্য হলেও তার একটা নোবেল প্রাপ্য ছিলো। আর কিছু না হোক ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অভূতপূর্ব নির্বাচনের জন্য তার একটা নোবেল পাওয়ার দরকার ছিলো। আমার মনে হয় নোবেল কমিটিতে যারা ছিলেন তার বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের নাগরিকরা ভোগান্তির শেষ প্রান্তে। আজকের গোটা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমার মনে হয় সবকিছু শেষের আগে যেসব অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে, সেগুলোই ঘটে যাচ্ছে।’

Related posts

Leave a Comment