মুক্তবার্তা ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকটকে জাতীয় সংকট উল্লেখ করে এই সংকট নিরসনে জাতীয় কনভেনশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সমস্যার সমাধান করারও আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রামাণ্যচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিন তিনবার বৈঠক করার পরেও রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তারা কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে বিশ্বের দুটি দেশ যাদের নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে চীন ও রাশিয়া তারা একমত হতে পারেনি। যার ফলে এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চিত হয়ে গেছে। সেইসাথে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আদৌ কোন সিদ্ধান্ত হবে কিনা?
“মিয়ানমারের নেত্রী, যাকে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হিসেবে সারা বিশ্ব গর্ববোধ করতো তার দেশেই আজকে এই ঘটনা ঘটছে। তিনি এখন ক্ষমতায় আছেন।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি টীম পাঠিয়েছেন বাংলাদেশে। সেই টীমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে ‘জয়েন ওয়ার্কিং কমিটি’ এর মাধ্যমে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়টি একদম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে এবং সরকার আন্তর্জাতিক কমিউনিটিতে কনভেন্স করতে ব্যর্থ হয়েছে। যে বাংলাদেশের পাশের রাষ্ট্রে একটি জাতীকে নির্মূল করার জন্য কি ভয়াবহ গণহত্যা তারা চালিয়েছে। সরকার ব্যর্থ হয়েছে মানবতার কি নির্মম পরিহাস সেখানে হয়েছে তা বুঝাতে। সরকার ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপর, অর্থনীতির উপর, পরিবেশের উপর, সমাজের উপর এর কি বৈরী প্রভাব পড়বে সেটা বুঝাতে।
“সেই জন্যই আমরা দেখিনি যে, বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল সেখানে কিংবা বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে গেছে। আমরা বরাবরই বলে এসেছি, এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর উচিত সফর করা বা দেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি সরকারী প্রতিনিধি দল সেখানে যাওয়া উচিত। দুর্ভাগ্যক্রমে সেটা এখনো হয়নি।
“জাতীর উপর যে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে এই সমস্যা মোকাবেলায় একটা জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন ছিল সেটা এখনো পর্যন্ত সরকার করছে না।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, বিএনপি নেতা নায়ক উজ্জ্বল, জাসাসের সভাপতি মামুন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহ সভাপতি শায়রুল কবির খান, চিত্র নায়িকা শায়লা প্রমুখ।