ভুলে দশ বছর ধরে ফাঁসির সেলে

মুক্তবার্তা ডেস্ক:আদালত সংশ্লিষ্টদের ভুলে দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামী সাত বছরের বেশি সময় ধরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির সেলে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ২০০৫ সালে পাঁচজনের ফাঁসির আদেশ হয়।

পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে চারজন খালাস এবং সুনামগঞ্জের ছাতকের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র আবদুল খালিকের ১০ বছরের সাজা হয়। কিন্তু এতদিন ধরে কারাগারে এই আদেশ না পৌঁছানোর কারণে ফাঁসির আসামি হিসেবে ফাঁসির সেলে অবস্থান করছেন তিনি।

আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভুলের কারণে কাগজ যায়নি কারাগারে। আর আইনজীবীরা বলছেন, এটা মানবতার চরম লঙ্ঘন।

২০০০ সালে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বনগাঁওএ আবদুল খালিকের ভাই খুন হলে মামলা করনে তিনি পরবর্তীতে আসামি পক্ষ ২০০২ সালে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের খুনের মামলায় আবদুল খালিককে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০০৫ সালের ২৪ জুলাই এই মামলার রায়ে ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে আদালত ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক আদেশে সাজা কমিয়ে ৪ জনকে খালাস এবং প্রধান আসামি আবদুল খালিককে ১০ বছরের সাজা দেন। কিন্তু সাত বছরেও এই আদেশ পৌঁছেনি কারাগারে।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার সিনিয়র জেল সুপার মোঃ ছগির মিয়া বলেন, ‘কিছু দিন যাবত সে দাবি করছে ফাঁসির আদেশ থেকে উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কোনো কপি পাইনি। ’

তার মা ও ভাই বলছে তাকে বের হতে দিচ্ছেনা এই চক্র। তবে আদালত সংশ্লিষ্টরা দায়সারাভাবে জানালেন, ভুলে কাগজ যায়নি কারাগারে।

এদিকে ফাঁসির সেলে থাকা আবদুল খালিক মুক্তি চান। বিষয়টি অমানবিক আখ্যায়িত করে আবদুল খালিককে দ্রুত মুক্তির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ লালা।

ফাঁসির আসামি না হয়েও ৭ বছর ধরে ফাঁসির সেলেই থাকা মানবেতর জীবনযাপনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন আবদুল খালিককের স্বজনরা।

Related posts

Leave a Comment