মুক্তবার্তা ডেস্ক:রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদের দুই জন সদস্য। সোমবার বেলা একটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানানো হয়।
আগামী শুক্রবার চার দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কী কী চুক্তি বা সমঝোতা হচ্ছে সে বিষয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এখনও কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে প্রধানত ভারত ও চীনা বিভিন্ন পত্রিকায় নানা খবর প্রকাশ হচ্ছে। আর বিদেশি গণমাধ্যমে খবরের ওপর ভিত্তি করে বিএনপি এই সফর নিয়ে আগাম সমালোচনায় মুখর।
ভারতের বিষয়ে কোনো ধরনের চুক্তির আগে ও পরে বিএনপি বরাবরই সন্দিহান। বিশেষ করে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ থাকলে বরাবরই যে কোনো ধরনের চুক্তির বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থান নেয় তারা। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরও বিএনপি এর বিরোধী অবস্থান নিয়েছিল। বলেছিল, এই চুক্তির ফলে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা-কলকাতা বাস চালুর পর সার্বভৌমত্ব নষ্ট হবে দাবি করে এর বিরুদ্ধে টানা তিন দিন হরতাল করেছিল দলটি।
এবারও প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে একই ধরনের অবস্থান নিয়েছে বিরোধী দলটি। বিএনপি নেতাদের দাবি, এই সফরে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার এবং এই চুক্তি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। কোনো ধরনের সামরিক চুক্তি হলে বাংলাদেশের মানচিত্র থাকবে কি না সে বিষয়েও সংশয়ের কথা জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের চার দিন বাকি থাকতে বৈঠকে বসে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এখানে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গ।
এ ছাড়া চট্টগ্রামে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নূরু হত্যা, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং দলের সাংগঠনিক সুবিধা অসুবিধা নিয়েও আলোচনা হয় এই বৈঠকে।
নাম না প্রকাশের শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘বৈঠকে ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরু হত্যার নিন্দা জানানো হয়েছে। তার হত্যার প্রতিবাদে কর্মসূচির দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক মনে করে, ফলাফল সন্তোষজনক হলেও ইসি নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে পারেনি। নির্বাচনে কারচুপি না হলে আরো বেশি ব্যবধানে সাক্কু বিজয়ী হত।’
বৈঠক সূত্রে আরো জানা গেছে, মূলদল ও অঙ্গসংগঠনের সাংগঠনিক সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। এসব সমস্যা কাটিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন, হামলা-হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি দেবে বিএনপি।
কবে নাগাদ কর্মসূচি দেয়া হতে পারে জানতে চাইলে এই নেতা বলেন, আগামী মাস থেকে শুরু হতে পারে।
এছাড়া ঢাকা চলমান আইপিইউ সম্মেলন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।