ব্রাজিল পোশাকের বিনিময়ে গরুর মাংস দিতে চায়

মুক্তবার্তা ডেস্ক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ এসব অঞ্চলের চারটি দেশে ৩০ কোটি মানুষ বাস করে। শুধু ব্রাজিলেই ২৫ কোটি মানুষ। এ মার্কেটটা যদি আমরা তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে ধরতে পারি, তাহলে একটা বিশাল মার্কেট হবে। তবে এসব দেশে ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এর উপরে আরও বিভিন্ন শুল্ক তো রয়েছেই। তারা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে আগ্রহী। কিন্তু বিনিময়ে বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানি করতে চায়।

ঢাকায় হোটেল ওয়েস্টিনে অনুষ্ঠিত ‘ফোস্টারিং গ্লোবাল ফ্রি ট্রেড রিলেশনস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেট-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিআইএস-বিসিসিআই) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, দেশে এসে যখন এ বিষয়ে আলোচনা করলাম তখন মাংস ব্যবসায়ীরা বলল তাদের মাংস আমদানি করা যাবে না। এখন কি করব? দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করলে তারা মাংস পাঠাতো আমরা অধিক সুবিধা নিয়ে পোশাক রফতানি করতাম। এটা একটা হিসাব করা দরকার যে, আমরা পোশাক রফতানি করে কি পরিমাণ লাভবান হব, আর মাংস আমদানি করেই বা কি পরিমাণ ক্ষতি হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেলে বিশ্ববাণিজ্য প্রসারের জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ করার বিকল্প নেই। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে, এর তিন বছর পর এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধাগুলো আর থাকবে না। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে হবে। রফতানি বাণিজ্য বাড়াতে নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ করার চেষ্টা করছি। এফটিএ করা দরকার। কিন্তু সেখানেও আমাদের ন্যাশনাল ইন্টারেস্টটা বিবেচনায় আনতে হবে। দেখা যাবে যে, আমাদের কোথাও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা এফটিএ করার বিষয়ে এগুবো।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে বাণিজ্য বাড়াতে গত ৯ মাস আমি অনেক দেশে গেছি। রাশিয়াও একটা বড় বাজার। কিন্তু আমরা সেসব মার্কেটে ঢুকতে পারছি না। শুধু পথটা বের করতে পারলে এসব মার্কেটে আমরা চোখ বন্ধ করে চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পোশাক পাঠাতে পারি। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সরাসরি ব্যাংকিং ব্যবস্থা নেই। এটাও আমাদের ভুগাচ্ছে। আমরা এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’

সেমিনারে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’র (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ আর ভিয়েনামের জিডিপি প্রায় সমান। অথচ বাংলাদেশ বছরে ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি করে। অথচ ভিয়েতনাম প্রতি বছর প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করে। ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে ২৬টি দেশের এফটিএ করেছে অথচ আমরা একটি দেশের সঙ্গেও এফটিএ করতে পারিনি।

Related posts

Leave a Comment