মুক্তবার্তা ডেস্ক:নতুন নেত্রী পেল চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং। গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত ভোটে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী নির্বাচিত হয়েছেন ক্যারি লাম। হংকংয়ের প্রথম প্রধান নারী নির্বাহী লাম সেখানকার রাজনৈতিক বিভক্তি দূর করার অঙ্গীকার করেছেন।
ফল ঘোষণার পরে লাম বলেন, ‘ধন্যবাদ সকলকে। আপাতত আমার একটাই লক্ষ্য— মানুষের মধ্যে যে হতাশা আর বিভেদ রয়েছে, সেটা দূর করা। একসঙ্গেই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।’
জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও প্রাক্তন অর্থ সচিব জন সাং-কে পরাজিত করেন ৫৯ বছর বয়সী লাম। লামের ভোট ৩৬৫টি। অপরদিকে বেইজিংপন্থী লাম পেয়েছেন এক হাজার ১৬৩টি ভোটের মধ্যে ৭৭৭টি ভোট।
দিন কয়েক আগে থেকেই ‘হলুদ ছাতা’ মাথায় রাস্তায় নামতে শুরু করেছিলেন হংকংবাসীর একটা বড় অংশ। গণতন্ত্র আর ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবিতে ২০১৪ থেকেই হংকংয়ে চলছে এই ‘ছাতা আন্দোলন’।
হংকংয়ের জনসংখ্যা এই মুহূর্তে প্রায় ৭৫ লাখ।কিন্তু নেতা বাছাইয়ের ক্ষমতা রয়েছে শুধু ১২০০ জনের একটি নির্বাচনী কমিটির হাতে। প্রথম থেকেই এই কমিটিতে রয়েছেন বেইজিংপন্থী তাবড় শিল্পপতিরা।
প্রশাসনের নতুন মুখ ঘোষণা হতেই হতাশায় ভেঙে পড়লেন ২২ বছর বয়সী ছাত্র এরিক সাং। গণনাকেন্দ্রের বাইরের রাস্তাটা দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘চীনা পদ্ধতিতে এই নেতা বাছাইয়ের ব্যাপারটা হাস্যকর পর্যায়ে চলে গিয়েছে। জনমত সমীক্ষা বলল— প্রাক্তন অর্থ সচিব জন সাং এগিয়ে আছেন। শেষ পর্যন্ত নিজেদের লোককেই বেছে নিল বেইজিং।’
১৯৯৭ সালে ‘বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল’ নামে চীন শাসনের অধীনে আসে হংকং। প্রাথমিকভাবে হংকংকে স্বাধীনতা আর স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার কথা বলেছিল বেইজিং। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, যত দিন গিয়েছে ততই হংকংয়ের উপর জাঁকিয়ে বসেছে চীন। ২০১৪ সালে পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসন এবং অবাধ ভোটের দাবিতে রাস্তায় নামেন কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী।
সরকারিভাবে, ১ জুলাই ক্ষমতায় আসছেন লাম। কিন্ত লামের আগামী দিন যে সহজ হবে না, তার ইঙ্গিতও মিলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, ‘১ জুলাই বড়সড় আন্দোলন হতে চলেছে। আজ থেকে বিশ বছর আগে ওই দিনই চীনা শাসনের অধীনে এসেছিল হংকং।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ১ জুলাই হংকংয়ে প্রথমবার পা রাখার কথা চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের।বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন তিনিও।