বিদ্যুৎ বিভ্রাটে এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

মুক্তবার্তা ডেস্ক:বিদ্যুৎ বিভ্রাটে এশিয়ায় শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এই দেশের বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত ‘মিটিং এশিয়া’স ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিডস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। শীর্ষ তিনে থাকা অপর দুটি দেশ হলো যথাক্রমে নেপাল ও পাকিস্তান।

এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এক মাসে গড়ে ৬৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। নেপালে এক মাসে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে মাসে ৫১ বার, পাকিস্তানে ৩১ বার। এ ছাড়া আফগানিস্তান ও ভারতে মাসে গড়ে ১০ বারের বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

প্রতিবেদন অনুসারে, এশিয়ার আর কোনো দেশে মাসে গড়ে ১০ বারের বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে না।

তবে বিদ্যুৎ অপচয়ের ক্ষেত্রে এশিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে নেপাল। দেশটিতে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৩০ শতাংশই অপচয় হয়। নেপালের পরে বেশি বিদ্যুৎ নষ্ট হয় যথাক্রমে কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, কিরগিজ রিপাবলিক, ভারত, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, মঙ্গোলিয়া, হংকং ও আজারবাইজানে। এরপরেই বাংলাদেশের অবস্থান।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, বিশুদ্ধ পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে এশিয়ার দেশগুলোর করণীয় বিষয়গুলোও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন খাত থেকে সংগ্রহ করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি কেমন সেটা জানার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা কতটা নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পায় সেটা জানা।

বিভ্রাটের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণেও বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের সারিতে। বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১৩ শতাংশ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের দুর্বলতার কারণে নষ্ট হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বোচ্চ চাহিদার (পিক আওয়ার) সময়ে দৈনিক গড়ে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এডিবির হিসাব বিবেচনায় নিলে সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে উৎপাদিত ৮ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে অপচয় হয় ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে এশিয়ায় গড়ে বার্ষিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। একই সময়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে গড়ে ৬ শতাংশ।

তবে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নের ফলে দেশটিতে কৃষি উৎপাদন, শ্রমিকের মজুরি ও কর্মদক্ষতা বেড়েছে, পণ্য উৎপাদনের খরচ কমেছে। এর ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেশি উপকৃত হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সড়কের মান ও রেলপথের পরিমাণ আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এডিবি।

Related posts

Leave a Comment