মুক্তবার্তা ডেস্ক:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিকে ‘বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ’ বাতলে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে না গিয়ে তারা বিরোধীদলের আসন হারিয়েছে। সামনের নির্বাচনে যদি না আসলে পরিণতি কী হবে সেটা তাদের অনেক নেতা ভালই জানেন। সেজন্য আগামী নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেয়াই তাদের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ঢাকার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা ভাল। সরকার ব্যবসা প্রসারে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। আমার মনে হয় বিএনপি আর অস্থিতিশীলতা করবে না।
নির্বাচন কমিশন নিয়োগে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটিকে বিএনপি মেনে নিয়েছে এমন দাবি তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা প্রথম দিকে সার্চ কমিটির বিরোধিতা করলেও পরে নাম জমা দিয়ে মূলত সার্চ কমিটিকে মেনে নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি সার্চ কমিটিকে একেবারেই মেনে না নিতো তাহলে তারা সার্চ কমিটির কাছে নাম প্রস্তাব করতো না। সুতরাং তাদের কর্মকাণ্ডেই বোঝা যাচ্ছে তারা সার্চ কমিটিকে মেনে নিয়েছে।’
এ সময় মন্ত্রী ২০১৯ সালের নির্বাচন ঠিক সময়েই হবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই হবে। আমরা তখন রুটিন কাজ করবো। আর নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবো।
ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গ্যাস সমস্যা আছে। এটা অস্বীকারের উপায় নেই। তবে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা এ বিষয়ে ভাল সংবাদ পাবো।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ১০৮টি কূপ খনন করতে যাচ্ছি। ভোলাতে প্রচুর গ্যাস রয়েছে। সেখানে দুটি কূপ খনন হবে। আমরা এলএনজিতে খুব বেশি ইন্টারেস্টেড। এটা নিয়েও কাজ চলছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি। ভারতে ৯০ শতাংশ। আর আমাদের ৭০ শতাংশ। এটার জন্য যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যান্ড কম। ঘনবসতির এই দেশে জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এ সত্ত্বেও আমরা চার রপ্তানি করতে যাচ্ছি। কিছু দিন আগে ২ লাখ মেট্রিকটন চাল রপ্তানির বিষয়ে কথা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ২১টির কাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি বেসরকারি আর ১৮টি সরকারি। ইক্সপোর্ট ডায়ভারিটিফিকেশন নিয়েও আমরা কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গত কেবিনেটে কথা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কিছু খাতে ক্যাশ ইনসেনটিভ দেয়ার। সেটিরি বিষয়ৈ প্রধানন্ত্রীর নীতিগত সম্মতি আছে। আপনাদের দাবি ২০ শতাংশ হলেও কিছু তো আমরা দেবেনই। এটা অনেক বেশি জরুরি। এতে ব্যবসা বাণিজ্য আরও বাড়বে।
জিএসপি নিয়ে আমাদের ভাবার কোনো কারণ নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর টিপিপি বাতিল করেছে। এতে আমাদের লাভ হয়েছে।’ আর ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের বিমানবন্দরকে আরও গতিশীল ও আধুনিক হতে হবে। এখন যে অবস্থা বিমানবন্দরে বিরাজ করছে সেটা চলতে পারে না। একটি ল্যাগেজ নিয়ে বিমানবন্দরে অবতরণ করলে সেটি পাস করতেই তিন/চার ঘণ্টা লাগে। এভাবে হয় না। সেজন্য আমাদের বিমানবন্দরের অবস্থার পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করেন তিনি।