‘বডিগার্ডসহই গণধোলাই হবে’ ইমরান এইচ সরকার

মুক্তবার্তা ডেস্ক:গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বনানীর হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের অন্যতম প্রধান আসামি নাঈম আশরাফকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার বিকালে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে গণজাগরণ মঞ্চ।

ওই ধর্ষণ মামলার আসামিদের সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ইমরান বলেন, “একজন ধর্ষক (নাঈম) এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। পুলিশ প্রশাসনকে বলছি, সব অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করুন।”

মাসখানেক আগে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে বনানীর একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাতভর আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা হয়।

মামলার আসামিদের মধ্যে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে বৃহস্পতিবার সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এই মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাফাতের গাড়িচালক ও দেহরক্ষী এবং তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। সাফাত ও নাঈম ধর্ষণ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীদের।

সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান বলেন, এবার জনগণের দাবির মুখে বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ধর্ষক, ধনকুবেরের ছেলেদের গ্রেপ্তার করার পর তারা নিজস্ব বডিগার্ডসহ আদালতে গেল। দরিদ্র কেউ অপরাধ করলে তার কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়ে যায়। তাহলে এই দিলদার আহমেদের ছেলের বেলায় সেটা হল না কেন, সেটাই আমার প্রশ্ন।”

ইমরান বলেন, “এই বডিগার্ডরাই তো ধর্ষণের সময় বন্দুক ধরে রেখেছে, ভিডিও করেছে। বডিগার্ড নিয়ে বের হচ্ছেন, জনগণ বডিগার্ডসহ ধোলাই দিয়ে শায়েস্তা করবে।”

ধর্ষকদের পক্ষে যারাই দাঁড়াবে তাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ লাঠি নিয়ে নামবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দিলদারদের মনে করিয়ে দিতে চাই, বডিগার্ডরা আপনাদের পাহারা দিয়ে রাখতে পারবে না। এই পুলিশরাও আপনাদের পাহারা দিয়ে রাখতে পারবে না। ধর্ষকদের পক্ষে যারাই দাঁড়াবে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে জনগণ সবার বিরুদ্ধেই লাঠি নিয়ে নামবে।”

আইনজীবীদের প্রতি ধর্ষকের পক্ষে না দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ইমরান বলেন, “কোটি কোটি টাকা নিয়ে যে আইনজীবীরা এই ধর্ষক- লুটেরাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন, তাদেরও আমরা চিনতে চাই। আমি ঘোষণা দিতে চাই, বিচার শুরু হলে আদালতেও আমরা যাব। কোন আইনজীবীরা ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে মিথ্যাচার করেন, সেটা আমরা দেখব।” ইমরান বলেন, “শুধু এই দুজন শিক্ষার্থীর ধর্ষণ নয়, হযরত আলী তার শিশু কন্যা আয়েশাকে নিয়ে যে আত্মহত্যা করল বিচার না পেয়ে, এরচেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে!

“আমরা জলজ্যান্ত মানুষেরা ঘুরে বেড়াচ্ছি, আর একজন নাগরিক তার শিশু কন্যা ধর্ষণের বিচার না পেয়ে রেললাইনে গিয়ে আত্মহত্যা করল, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের এর জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত।” আলীর মতো আর কোনো বাবার যেন এমন পরিণতি না হয় সেজন্য দেশের প্রতিটি নাগরিককে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির বলেন, “যারা ধর্ষণের শিকার হন, তাদের সাহস করে মুখ খুলতে হবে, ধর্ষণের বিচার চাইতে হবে। ধর্ষণ এখন একটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ধর্ষণকে খুব স্বাভাবিক ঘটনা হিসাবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে এটা আমরা মেনে নেব না।”

Related posts

Leave a Comment