মুক্তবার্তা ডেস্ক: ৪০ বছরে পা দিল বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলটির সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটা লেজেগোরবে। মামলা-মোকাদ্দমায় বিপর্যস্ত শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে চলা বিএনপি এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় অনেকটা সাদামাটাভাবে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
অবশ্য বিএনপি নেতারা দলের নাজুক অবস্থার কথা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, সরকারের দমনপীড়নের কারণে তারা গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারো তারা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যতটা না রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দিয়ে দল পরিচালনা করার কথা বিএনপি সেই জায়গায় অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। দলটি অনেকটা আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে। যে কারণে জনগণের কাছে যাওয়ার মতো কাঙ্ক্ষিত কৌশল গ্রহণ করতে পারছে না বিএনপি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, অধিকমাত্রায় আমলা ও বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে বিএনপিকে প্রকৃত রাজনৈতিক নেতাদের ওপর নির্ভর করতে হবে।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সে সময়ের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান পাল্টা-অভ্যুত্থানের এক পটভূমিতে ৭ নভেম্বর ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন জিয়াউর রহমান। প্রথমে তিনি ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। পরে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হলে বিএনপি প্রথমবারের মতো নেতৃত্বের সংকটে পড়ে। তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার সাময়িক সময়ের জন্য সরকার ও দলের হাল ধরেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। দলের সংকটকালে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন খালেদা জিয়া।
টানা প্রায় এগারো বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন বর্জন করে তাদের নেতৃত্বাধীন জোট নিয়ে নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনে নামে। কিন্তু টানা কয়েক মাস আন্দোলনে থাকা বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরের বছর নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতেও টানা কয়েক মাস আন্দোলন চালিয়ে যায় দলটি। তবে সফলতার দেখা মিলেনি।
এমন অবস্থার মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বেশিরভাগ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা বিচারাধীন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও রয়েছে হাজারো মামলা।