তিস্তায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করার দাবি ফখরুলের

মুক্তবার্তা ডেস্ক:জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান।  ‘রক্ত দিয়ে এনেছি স্বাধীনতা, জীবন দিয়ে রক্ষা করবো সার্বভৌমত্ব ‘ শীর্ষক মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে অনেকগুলো সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। শুধু একটা বিষয়ে যেটি আমাদের প্রাণের দাবি, যার ওপর হাজার কোটি মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভর করে তিস্তা নদীর পানির চুক্তি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) করে আসতে পারেননি। শুধু তিস্তা নদীর পানি নয় ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ব্যাপারেও কোনো চুক্তি করতে পারেননি। অথচ গত কয়েক বছর ধরে তারা ক্ষমতায় আসার পরে যে বিষয়গুলো ছিল বাংলাদেশের জন্য ট্রামকার্ড, দর কষাকষির প্রধান মাধ্যম সেগুলোকে তিনি অবলীলায় ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে।’

ফখরুল বলেন, ‘ট্রানজিট দিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারত থেকে ফিরে এসে বলেছেন, পানি মাঙ্গা, ইলেকট্রিসিটি মিলা, কুছতো মিলা। আমাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে এখন সেই কুছ মিলার জায়গায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের এই নতজানু মনোভাব দিয়ে কোনো কিছু আদায় করা যায় না। এই সরকার ব্যর্থ হওয়ার একটিই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। যারা তাদেরকে ক্ষমতায় টিকে রেখেছে তাদের কাছে তারা নিজেদের, জনগণের দাবি দাওয়াগুলো তুলে ধরতে পারছে না, দাবি আদায়ও করতে পারছে না। আমাদের নিজেদের যা প্রয়োজন তা নিজেদেরই আদায় করতে হবে।’

তিস্তা নদীসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে জাতিসংঘে এটিকে তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। আমাদের দাবি প্রতিটি নদীর ন্যায্য হিস্যা আমাদের দিতে হবে। আমরা কোনো দয়া চাইছি না। আমাদের যেটা আইনগতভাবে পাওনা সেটি আমরা চাই।’

হাওরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বন্যার পানিতে মানুষের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। যেহেতু ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি নেই, যখন তাদের ওখানে বন্যা হয় তখন তারা বাঁধগুলো খুলে দেয় আর আমরা প্লাবিত হয়ে যাই।’

ফখরুল বলেনন, ‘আমরা যে আন্দোলন করছি এটি কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, কোনো দলের জন্য নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৗমত্ব রক্ষার আন্দোলন।’

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আপনারা নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ কারাগারে বন্দী হয়ে আছে। সেই কারাগার থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।’

জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন, দলমত এক হয়ে জাতীয় স্বার্থে আন্দোলন করি।

Related posts

Leave a Comment