ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে আটক ১৫

মুক্তবার্তা ডেস্ক:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৫ জনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরীক্ষার হলে ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতির করার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।

আটকদের মধ্যে ১৩ জন পরীক্ষার্থী। তাদের বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। আর বাকি দুইজন পরীক্ষায় জালিয়াতি করার ডিজিটাল ডিভাইসের যোগানদাতা। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের আটক করে।

পরীক্ষা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ বলেন, আটক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে পরীক্ষায় জালিয়াতি করার ডিজিটাল ডিভাইস পাওয়া গেছে। আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত করবেন। এছাড়া বাকি যে দুইজনকে গতরাতে আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে। এবং তাদের মাধ্যমে মূল হোতাদের ধরার চেষ্টা করা হবে।

আটক ১৩ শিক্ষার্থী হলেন নূর মোহাম্মদ মাহাবুব, ফরহাদুল আলম রাফি, ইশরাফ হোসেন রাফী, আবদুল্লাহ আল মুকিম, রিশাদ কবির, আসাদুজ্জামান মিরাজুল, ইশতিয়াক আহমেদ, জয় কুমার সাহা, রেজওয়ানা শেখ শোভা, মাসুকা নাসরিন, তারিকুল ইসলাম, নাসিরুল হক নাহিদ ও মিরাজ আহমেদ। এদের মধ্যে ইশরাফ হোসেন রাফী ছাড়া ১২ শিক্ষার্থীকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এছাড়া পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিভাইস বিতরণ করা আটক দুইজন হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মহিউদ্দিন রানা, ফলিত রসায়ন বিভাগের আবদুল্লাহ আল মামুন। রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে এবং মামুন শহীদুল্লাহ হলের ছাত্র। এর মধ্যে রানা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক।

জানা গেছে, মামুন ও রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের যোগান দিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম গতরাতে রুম থেকে ডিভাইসসহ তাদের আটক করে।

রানা,  মামুন ও পরীক্ষার্থী ইশরাফ হোসেন রাফীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়মিত মামলা করবে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৫৩টি ও ক্যাম্পাসের বাইরে ৩৩টি স্কুল-কলেজসহ মোট ৮৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ইউনিটে এক হাজার ৬১০টি (বিজ্ঞানে- ১ হাজার ১৪৭টি, বিজনেস স্টাডিজে- ৪১০, মানবিকে- ৫৩টি) আসনে আবেদনকারীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৫৪জন। তবে পরীক্ষায় কতজন অংশগ্রহণ করেছে এখনো তা জানা যায়নি।

ঢাবি ক্যাম্পাসের বাহিরে যেসব কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারীবাগস্থ লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, আনোয়ারা বেগম মুসলিম গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ড. শহীদুল্লাহ কলেজ, লালবাগ মডেল স্কুল ও কলেজ, আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নতুন পল্টন লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, নীলক্ষেত হাই স্কুল, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুল, আইডিয়াল কলেজ, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ, ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, লালমাটিয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, শেরে বাংলানগর গভর্নমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল, শেরে বাংলানগর গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টিকাটুলি কামরুন্নেসা গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ এবং দনিয়া কলেজ।

Related posts

Leave a Comment