ডায়াবেটিস প্রতিরোধে করণীয়

মুক্তবার্তা ডেস্ক: ডায়াবেটিস একটি বিপাক জনিত রোগ। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এক সময় তা প্রস্রাবের সংগে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে বা সংক্রামক কোন রোগ নয়।

ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের : টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস। অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন একেবারেই নিঃসরণ না হলে হয় টাইপ ১ ডায়াবেটিস। আর একটু কম ইনসুলিন নিঃসরণ বা ইনসুলিনের দুর্বল কার্যকারীতার কারণে হয় টাইপ ২ ডায়াবেটিস। একটু সচেতন হলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে জীবন যাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে এবং কিছু নিয়ম মানলেই হবে।

শরীরের ওজন কমানো :
শরীরের ওজন কমালে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। কম খাওয়া আর বেশি পরিশ্রম করা শরীরের ওজন কমানোর গোপন কথা। শরীরের ওজন কমাতে চাইলে যে পরিমাণ ক্যালরি শরীরের জন্য প্রয়োজন, তার চেয়ে একটু কম গ্রহণ করতে হবে আর ব্যবহার করতে হবে তার চেয়ে বেশি। খাবার খেতে হবে পরিমাণের চেয়ে কম, আর শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে একটু বেশি।

খাবারে তেল চর্বি কম :
শরীরের মোট ক্যালরি চাহিদার ৩০ শতাংশের বেশি যেন তেল থেকে না আসে। আর স্যাচুরেটেড তেল থেকে যেন তা ৭ শতাংশের বেশি না হয়।

আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া :
মাংস স্বাস্থ্যকর খাবার, কিন্তু এটি প্রতিদিন খাওয়া ঠিক নয়। কেননা এটা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সে কারণে খাবারের তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য খাদ্য, ইত্যাদি বেশি খেলে তা রক্তের সুগারের মাত্রা সঠিক রাখতে সহায়ক। আঁশযুক্ত খাবারে ক্যালরি কম। তাই শরীরের ওজন কমাতেও ভালো ভূমিকা রাখে আঁশযুক্ত খাবার।

নিয়মিত ব্যায়াম করা :
দৈনিক ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন দ্রুতলয়ে হাঁটা খুবই ভালো ব্যায়াম। এছাড়া সাইকেল চালানো, জগিং, সাঁতার কাটা, ইত্যাদিও ভালো ব্যায়াম। ব্যায়াম করলে ইনসুলিন হরমোনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রক্তের সুগার সঠিক মাত্রায় থাকে। শরীরের ওজন কমে। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাও সঠিক থাকে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা :
ডায়াবেটিসের বেশির ভাগ লক্ষণই নীরব ঘাতক। সে কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আগেভাগে লক্ষণ ধরা পড়লে তা মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই চিকিৎসা করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

Related posts

Leave a Comment