মুক্তবার্তা ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টার চাষ। স্বল্প পরিসরে মাল্টার আশানুরূপ ফল পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার চাষ শুরু করেছেন। সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় উৎপাদিত এই মাল্টা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে গবেষকরা বলছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আগামীতে বিদেশে মাল্টা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন সম্ভব।
হটিকালচার সেন্টারের উদ্যান প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম জানান, আমদানি কমাতে ও অধিক উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে ২০১১ সালে দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় হটিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে মাঠ পর্যায়ে বারি মাল্টা-১ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের আতাহির, জামতাড়া, আমনুরা, নাচোল, গোমস্তাপুরের লাল মাটিতে দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে মাল্টার বাগান। এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে মাল্টার চাষ ও ফল আহরণ শুরু হয়েছে। এ কারণে চাষি ও বাগান মালিকদের সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
বাগান মালিক মতিউর রহমান জানান, তিনি ৬০ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে মাল্টার চাষ শুরু করেছেন। ফল এবং চারা বিক্রি করে বেশ লাভবান হওয়ায় অনেকেই মাল্টা চাষে এগিয়ে আসছেন। এ মৌসুমে প্রায় ৫০ হাজার চারার অর্ডার পেয়েছেন বলে তিনি জানান।
বাগান মালিক মাহাবুবুর রহমান বাচ্চু জানান, বাবুডাইংয়ে ১৩ বিঘা জমিতে মাল্টার চাষ শুরু করেন তিনি। এবার ভালো ফলন হওয়ায় অর্ধেক খরচ উঠে আসবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাল্টা তাদের ভাগ্যন্নোয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারবে বলে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা জানান, দেশে ফলের চাহিদা পূরণে অবদান রাখতে বাণিজ্যিকভাবে আরো বেশি মাল্টা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে গত অর্থ-বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় নতুন করে ২০ শতক জায়গায় ১৫০ টি মাল্টার বাগান তৈরি করা হয়েছে। এসব বাগানের মালিকদের পরামর্শ এবং তদারকি করছে কৃষি বিভাগ।
হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইফুর রহমান জানান, মাল্টা চাষে অল্প খরচ, কিন্তু লাভ বেশি। আর আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ অনুকূলে থাকায় মাল্টা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাল্টার চারা নিয়ে গোদাগাড়ী-তানোরের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক ৬০ বিঘা, গোমস্তাপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খুরশেদ আলম বাচ্চু ১০০ বিঘা, শিল্পপতি আকবর হোসেন ৬০ বিঘা, শামীম ১৩ বিঘার বাগান তৈরি করেছেন। এর মধ্যে অনেকের বাগানে মাল্টার কিছু কিছু ফলন এসেছে।