মুক্তবার্তা ডেস্ক:উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের একটি পরীক্ষা ‘ব্যর্থ’ হয়েছে বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। প্রতিবেশী সিউলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সিউলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, ‘উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সজাগ রয়েছে এবং উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
উত্তর কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর ওনসান থেকে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণগুলো চালানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিস্ফোরিত হয়। তবে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল এবং পরীক্ষাটি কোন ধরনের ছিল তা পরিষ্কার নয়। এটি শনাক্তের কথা নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।
গেল রবিবার উত্তর কোরিয়া তীব্র গতিসম্পন্ন রকেট ইঞ্জিন পরীক্ষা চালায়। সফলভাবে এ পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে দাবি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের।
চলতি মাসের প্রথমদিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া, সেগুলো ১০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপানি জলসীমায় গিয়ে পড়েছিল।
দেশটির সর্বশেষ এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার চলমান বার্ষিক সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করছে পর্যবেক্ষকরা। এই সামরিক মহড়াকে তাদের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচনা করে উত্তর কোরিয়া।
পিয়ংইয়ং গত বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফররত জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠক চলাকালীন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।
২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় গত বছর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে দেশটির তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত।গত বছর দুইটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপন চালায় দেশটি।
এদিকে জাতিসংঘ বার বার উত্তর কোরিয়াকে এসব পারমাণবিক অস্ত্রের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে আসছে। পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে জাতিসংঘ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মহাশূন্যে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। ওই উৎক্ষেপণকে দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।
২০১১ সালে কিমের বাবার মৃত্যুর পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন তিনি। সদ্য বিদায়ী ২০১৬ সালের শুরুতেও হাইড্রোজেন বোমার ঘোষণা দেয় দেশটি। শেষ প্রান্তে এসে পঞ্চমবারের মতো পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর কথা জানায় উত্তর কোরিয়া। এর বাইরেও বেশ কয়েকবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়ে তারা।