মুক্তবার্তা ডেস্ক:মধ্যপন্থী হাসান রুহানি দ্বিতীয় মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক ফলাফলে জানা যায়। ইরানের রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিভিশন চ্যানেলে জানানো হয়, গতকালের নির্বাচনের ফলাফল গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৬০ লাখ ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে এক কোটি ৪৬ লাখ ভোটার রুহানিকে ভোট দিয়েছেন। যা অর্ধেকের চেয়েও বেশি।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, গতকাল চার কোটির বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। যা প্রায় মোট ভোটারের ৭০ ভাগ।
বিশ্বের শক্তিধর ছয় রাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচিত সমঝোতা চুক্তির পর এটি দেশটিতে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে হাসান রুহানির সঙ্গে লড়াই করেছেন কট্টরপন্থী নেতা ইব্রাহিম রাইসির। দুজনই আলেম হিসেবে পরিচিত।
পরমাণু চুক্তির পর ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাসহ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অনেকাংশে তুলে নেওয়া হলেও তার ফল দেশের মানুষের জীবনে পড়তে শুরু করেনি এখনো। এ প্রেক্ষাপটেই গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বলা হচ্ছে, গত বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচনের চেয়ে গতকাল কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল।
৬৮ বছর বয়সী হাসান রুহানি রাজধানী তেহরানের একটি কেন্দ্রে ভোট দেন। সেখানে তার সমর্থকদের ভিড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল। এ সময় রুহানি বলেন, ‘এই নির্বাচনে ইরানিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আমাদের জাতীয় শক্তি ও নিরাপত্তা জোরদার করেছে।’
ভোটারদের নিজের দিকে টানতে রুহানি প্রশ্ন রেখেছেন, তারা আরও নাগরিক স্বাধীনতা, নাকি উগ্রপন্থা কোনটি চান।
অন্যদিকে, রুহানির আমলে ব্যাপক বেকারত্ব ও সরকারি ভর্তুকি কমানোর কারণে জনমনের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে কর্মজীবী শ্রেণির ভোট নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি (৫৬)। দক্ষিণ তেহরানে ভোট দিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা থাকা উচিত।’
মোহসিন নামে ইব্রাহিম রাইসির এক সমর্থক বলেন, ‘রুহানি অনেক কাজ করেছেন, যার জন্য আমি তার প্রশংসা করি। কিন্তু আমরা বিদেশিদের ওপর ভরসা করে থাকতে পারি না।’
উল্লেখ্য, হাসান রুহানি ২০১৩ সালে ক্ষমতায় বসেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের শক্তিধর ছয় রাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তিকে তার বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে পর্যায়ক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি গতকাল ভোট দিয়ে বলেন, ‘দেশের ভাগ্য এখন ইরানিদের হাতে।’